মঙ্গলবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

উচ্চারণরীতি কাকে বলে ?


Girl in a jacket

১। প্রশ্ন : উচ্চারণরীতি কাকে বলে? বাংলা ভাষা উচ্চারণের চারটি নিয়ম লেখো।

উত্তর : শব্দের যথাযথ উচ্চারণের জন্য নিয়ম বা সূত্রের সমষ্টিকে উচ্চারণরীতি বলে।
(ক) শব্দের আদ্য ‘অ’-এর পরে ‘য’ ফলা যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ থাকলে সে ক্ষেত্রে ‘অ’-এর উচ্চারণ সাধারণত ‘ও’ কারের মতো হয়। যেমন-অদ্য (ওদেদা), কন্যা (কোন্না) ইত্যাদি।
(খ) পদের মধ্যে কিংবা শেষে ব-ফলা থাকলে সংযুক্ত বর্ণের উচ্চারণদ্বিত্ব ঘটে থাকে। যেমন—বিশ্ব (বিশেশা), পক্ক (পকেকা) ইত্যাদি।
(গ) যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণের সংযুক্ত ম-ফলার উচ্চারণ হয় না। যেমন-সূক্ষ্ম (শুকেখা), যহ্মা (জক্খাঁ) ইত্যাদি।
(ঘ) পদের মধ্যে কিবা অন্ত্যে যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে য-ফলা যুক্ত হলে সাধারণত তার উচ্চারণ হয় না। যেমন—সন্ধ্যা (শোন্ধা), স্বাস্থ্য (শাসেথা) ইত্যাদি।
(ঙ) শব্দের মাঝে বা শেষে ‘ক্ষ’-এর উচ্চারণ ‘ক্খ’ হয়ে থাকে। যেমন—দক্ষতা (দোকেখাতা), পক্ষ (পোকেখা) ইত্যাদি।.


প্রশ্ন:- অল্পপ্রাণ ও মহাপ্রান ধ্বনি ককে বলে ? উদাহরন সহ লেখ ।

বাতাসের চাপের আধিক্যের উপর ভিত্তি করে ব্যঞ্জনধ্বনিকে ২ ভাগে ভাগ করা যায়।

১. মহাপ্রাণ ধ্বনি: যে ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুস থেকে অধিক পরিমাণে বাতাস মুখের রুদ্ধতাকে সজোরে উন্মোচন করে নির্গত তাদের মহাপ্রাণ ধ্বনি বলে।
মহাপ্রাণ ধ্বনি ১১টি। যথা: খ, ঘ, ছ, ঝ, ঠ, ঢ, থ, ধ, ফ, ভ, হ।

২. অল্পপ্রাণ ধ্বনি: যে ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুস থেকে কম পরিমাণে বাতাস নির্গত তাদের অল্পপ্রাণ ধ্বনি বলে।
অল্পপ্রাণ ধ্বনি ১৩টি। যথা: ক, গ, চ, জ, ট, ড, ত, দ, প, ব, শ, ষ, স

[নোট:-] ঘোষ ও অঘোষ ধ্বনির উচ্চারণ
স্বরতন্ত্রীর অবস্থাভেদে ব্যঞ্জনধ্বনি ২ প্রকার।
১. অঘোষ ধ্বনি: যে সব ধ্বনি উচ্চারণের সময় স্বরতন্ত্র কম্পিত বা অনুরণিত হয় না তাদের অঘোষ ধ্বনি বলে। বাংলা অঘোষ ধ্বনির সংখ্যা ১৪টি। যথা: ক, খ, চ, ছ, ট, ঠ, ত, থ, প, ফ, শ, ষ, স, ঃ
২. ঘোষ ধ্বনি: যে সব ধ্বনি উচ্চারণের সময় স্বরতন্ত্র কম্পিত বা অনুরণিত হয় তাদের ঘোষ ধ্বনি বলে। ঘোষ ধ্বনি ১১টি। যথা: গ, ঘ, জ, ঝ, ড, ঢ, দ, ধ, ব, ভ, হ
]

৩ । প্রশ্ন : বাংলা ব্যঞ্জন ধ্বনি উচ্চারণের যেকোনো ৫টি নিয়ম উদাহরণসহ লেখো।

উত্তর : ব্যঞ্জন ধ্বনি উচ্চারণের ৫টি নিয়ম তুলে ধরা হলো :
(ক) বাংলা ভাষা শিক্ষার্থীকে ‘ঙ’ হরফটির নাম জানানো হয় ‘উঁয়ো’ রূপে। কিন্তু এর প্রাচীন নাম বা পরিচিতি যাই হোক, আধুনিক বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত এ বর্ণটি কখনো ‘উঁয়ো’ রূপে উচ্চারিত হয় না, হয় ‘অঙ’ রূপে। যেমন—রঙ, ঢঙ, সঙ, রাঙা, সঙিন, কঙ্কন ইত্যাদি।
(খ) ‘ঞ’ সাধারণ ‘চ’ বর্গের (চ, ছ, জ, ঝ) চারটি বর্ণের পূর্বে যুক্তাবস্থায় ব্যবহৃত হয়, তবে ক্ষেত্রবিশেষ ‘চ’ এর পরে বসে বাংলা উচ্চারণে ‘দন্ত্য ন’ এর মতো হয়। যেমন—পঞ্চ, লাঞ্ছিত, রঞ্জ, গঞ্জিত, ব্যঞ্জন ইত্যাদি।
(গ) য-এর পর প্রাচীন সংস্কৃত উচ্চারণ ছিল ‘ই অ’-এর মতো কিন্তু বাংলা উচ্চারণে এটি পরিষ্কার ‘জ’। এর প্রাচীন উচ্চারণের স্মারক হচ্ছে ‘য’ এর নিচে বিন্দু দিয়ে লেখা ‘য়’ আমরা যেটাকে অন্তঃস্থ ‘অ’ বলি। বাংলা ভাষায় এ দুটি বর্ণের উচ্চারণের কোনো পার্থক্য নেই। যথা—যম (জম্), জামাই (জামাই), যদি (জাদি), জগৎ (জগোত) ইত্যাদি।
(ঘ) আধুনিক বাংলা ভাষার উচ্চারণগত দিক থেকে এবং হসন্তযুক্ত ‘ঙ’ সম্পূর্ণ অভিন্ন। সংস্বকৃত ‘ং’ যে বর্ণের পরে সংযুক্ত হতো, যে স্বরবর্ণকে আংশিকভাবে সানুনাষিক করে দিত। বাংলায় ং-এর উচ্চারণ সর্বত্র ‘অঙ’ হয়। যেমন—অংশ, (অঙশো), বংশ (বঙেশা), কংস (কঙেশা) হংস (হঙ্স) ইত্যাদি।
(ঙ) ‘ঃ’ (বিসর্গ) এর উচ্চারণ ছিল অনেকটা ‘অর্ধ ‘হ’ এর মতো। বাংলায় কেবল বিস্ময়সূচক অব্যয়ের ক্ষেত্রে আমরা প্রাচীনকালের ‘ঃ’ (বিসর্গ) উচ্চারণের রেশ শুনতে পাই। যেমন—আঃ (আহ্), বাঃ (বাহ্), উঃ (উহ্), ওঃ (ওই্) ইত্যাদি।




১। প্রশ্ন : উচ্চারণরীতি কাকে বলে? বাংলা ভাষা উচ্চারণের চারটি নিয়ম লেখো।

উত্তর : শব্দের যথাযথ উচ্চারণের জন্য নিয়ম বা সূত্রের সমষ্টিকে উচ্চারণরীতি বলে।
(ক) শব্দের আদ্য ‘অ’-এর পরে ‘য’ ফলা যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ থাকলে সে ক্ষেত্রে ‘অ’-এর উচ্চারণ সাধারণত ‘ও’ কারের মতো হয়। যেমন-অদ্য (ওদেদা), কন্যা (কোন্না) ইত্যাদি।
(খ) পদের মধ্যে কিংবা শেষে ব-ফলা থাকলে সংযুক্ত বর্ণের উচ্চারণদ্বিত্ব ঘটে থাকে। যেমন—বিশ্ব (বিশেশা), পক্ক (পকেকা) ইত্যাদি।
(গ) যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণের সংযুক্ত ম-ফলার উচ্চারণ হয় না। যেমন-সূক্ষ্ম (শুকেখা), যহ্মা (জক্খাঁ) ইত্যাদি।
(ঘ) পদের মধ্যে কিবা অন্ত্যে যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে য-ফলা যুক্ত হলে সাধারণত তার উচ্চারণ হয় না। যেমন—সন্ধ্যা (শোন্ধা), স্বাস্থ্য (শাসেথা) ইত্যাদি।
(ঙ) শব্দের মাঝে বা শেষে ‘ক্ষ’-এর উচ্চারণ ‘ক্খ’ হয়ে থাকে। যেমন—দক্ষতা (দোকেখাতা), পক্ষ (পোকেখা) ইত্যাদি।

২। প্রশ্ন : বাংলা ‘অ’ এবং ‘এ’ ধ্বনির কমপক্ষে দুটি করে মোট পাঁচটি উচ্চারণের নিয়ম উদাহরণসহ উল্লেখ করো।
উত্তর : বাংলা ‘অ’ এবং ‘এ’ ধ্বনির পাঁচটি উচ্চারণের নিয়ম নিম্নে দেওয়া হলো :
(ক) ‘অ’ কিংবা ‘ আ ’-যুক্ত ধ্বনির পূর্ববর্তী অ-ধ্বনি স্বাভাবিক হয়। যেমন—অমানিশা, কথা ইত্যাদি।
(খ) অনেক সময় ই-ধ্বনির পরের ‘অ’ বিবৃত হয়। যেমন—গঠিত, মিত, জনিত ইত্যাদি।
(গ) শব্দের আদ্য ‘এ’ কারের পরে যদি ং ঙ কিংবা ঙ্গ থাকে এবং তারপরে ই, উ অনুপস্থিত থাকে, তবে সে ক্ষেত্রে ‘এ’, অ্যা-কারে রূপান্তরিত হয়। যেমন—বেঙ, খেঙরা, বেঙ্গমা, ভেংবা ইত্যাদি।
(ঘ) এ-কারযুক্ত একাক্ষর ধাতুর সঙ্গে আ প্রত্যয়যুক্ত হলে, সাধারণত সেই এ-কারের উচ্চারণ ‘অ্যা’ করা হয়ে থাকে। যেমন—খেদা, ক্ষেপা, বেচা, ঠেলা, খেলা ইত্যাদি।
(ঙ) একাক্ষর সর্বনাম পদের ‘এ’ সাধারণত স্বাভাবিকভাবে অর্থাৎ অবিকৃত এ-কাররূপে উচ্চারিত হয়। যেমন—কে, সে, যে, এ ইত্যাদি।

৩। প্রশ্ন : ‘হ’ সংযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ উচ্চারণের যেকোনো ৫টি নিয়ম লেখো।
উত্তর : ‘হ’ সংযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ উচ্চারণের ৫টি নিয়ম তুলে ধরা হলো :
(ক) ‘হ’-এর সঙ্গে ঋ-কার, র-ফলা কিংবা রেফ সংযুক্ত হলে ‘হ’ নয়, বরং ‘র’ মহাপ্রাণ হয়। যেমন—হৃদয় (হৃদয়্), সুহৃদ (সুহৃদ্), হৃদ্য (হৃদেদা) ইত্যাদি।
(খ) হ-এর সঙ্গে ণ বা ন যুক্ত হলে উচ্চারণ হৃ-এর মতো হয়। এ ক্ষেত্রে মূলত ‘ন’-এর মহাপ্রাণ হয়। যেমন—পূর্বাহ্ন (পুর্বানহ), অপরাহ্ন (অপোরান্হ), চিহ্ন (চিন্হ) ইত্যাদি।
(গ) হ-কারের সঙ্গে ম সংযুক্ত হলে ম-এর মহাপ্রাণ হয়। যেমন—ব্রহ্ম (বোম্হ) ব্রাহ্ম (ব্রাম্হ), ব্রাহ্মণ (ব্রোম্হন্) ইত্যাদি।
(ঘ) হ-এর সঙ্গে ‘য’ ফলা যুক্ত হলে ‘হ’-এর নিজস্ব উচ্চারণ থাকে না। বরং য-এর মহাপ্রাণ হয়। যেমন—উহ্য (উজেঝা), গ্রাহ্য (গ্রাজেঝা), সহ্য (শোজ্ঝা) ইত্যাদি।
(ঙ) হ-এর সঙ্গে ‘ব’ যুক্ত হলে ‘ব’ মহাপ্রাণরূপে উচ্চারিত হয়। যেমন—বিহ্বল (বিওভল), আহ্বান (আওভান), জিহ্বা (জিওভা) ইত্যাদি।

৪। প্রশ্ন : বাংলা ব্যঞ্জন ধ্বনি উচ্চারণের যেকোনো ৫টি নিয়ম উদাহরণসহ লেখো।

উত্তর : ব্যঞ্জন ধ্বনি উচ্চারণের ৫টি নিয়ম তুলে ধরা হলো :
(ক) বাংলা ভাষা শিক্ষার্থীকে ‘ঙ’ হরফটির নাম জানানো হয় ‘উঁয়ো’ রূপে। কিন্তু এর প্রাচীন নাম বা পরিচিতি যাই হোক, আধুনিক বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত এ বর্ণটি কখনো ‘উঁয়ো’ রূপে উচ্চারিত হয় না, হয় ‘অঙ’ রূপে। যেমন—রঙ, ঢঙ, সঙ, রাঙা, সঙিন, কঙ্কন ইত্যাদি।
(খ) ‘ঞ’ সাধারণ ‘চ’ বর্গের (চ, ছ, জ, ঝ) চারটি বর্ণের পূর্বে যুক্তাবস্থায় ব্যবহৃত হয়, তবে ক্ষেত্রবিশেষ ‘চ’ এর পরে বসে বাংলা উচ্চারণে ‘দন্ত্য ন’ এর মতো হয়। যেমন—পঞ্চ, লাঞ্ছিত, রঞ্জ, গঞ্জিত, ব্যঞ্জন ইত্যাদি।
(গ) য-এর পর প্রাচীন সংস্কৃত উচ্চারণ ছিল ‘ই অ’-এর মতো কিন্তু বাংলা উচ্চারণে এটি পরিষ্কার ‘জ’। এর প্রাচীন উচ্চারণের স্মারক হচ্ছে ‘য’ এর নিচে বিন্দু দিয়ে লেখা ‘য়’ আমরা যেটাকে অন্তঃস্থ ‘অ’ বলি। বাংলা ভাষায় এ দুটি বর্ণের উচ্চারণের কোনো পার্থক্য নেই। যথা—যম (জম্), জামাই (জামাই), যদি (জাদি), জগৎ (জগোত) ইত্যাদি।
(ঘ) আধুনিক বাংলা ভাষার উচ্চারণগত দিক থেকে এবং হসন্তযুক্ত ‘ঙ’ সম্পূর্ণ অভিন্ন। সংস্বকৃত ‘ং’ যে বর্ণের পরে সংযুক্ত হতো, যে স্বরবর্ণকে আংশিকভাবে সানুনাষিক করে দিত। বাংলায় ং-এর উচ্চারণ সর্বত্র ‘অঙ’ হয়। যেমন—অংশ, (অঙশো), বংশ (বঙেশা), কংস (কঙেশা) হংস (হঙ্স) ইত্যাদি।
(ঙ) ‘ঃ’ (বিসর্গ) এর উচ্চারণ ছিল অনেকটা ‘অর্ধ ‘হ’ এর মতো। বাংলায় কেবল বিস্ময়সূচক অব্যয়ের ক্ষেত্রে আমরা প্রাচীনকালের ‘ঃ’ (বিসর্গ) উচ্চারণের রেশ শুনতে পাই। যেমন—আঃ (আহ্), বাঃ (বাহ্), উঃ (উহ্), ওঃ (ওই্) ইত্যাদি।

৫। প্রশ্ন : বাংলা উচ্চারণে ‘অ’ কখন ‘ও’ রূপে উচ্চারিত হয়? উদাহরণসহ ৫টি নিয়ম লেখো।
উত্তর : বাংলা উচ্চারণে অ ও রূপে উচ্চারিত হওয়ার পাঁচটি নিয়ম হলো:
(ক) শব্দের আদ্য ‘অ’-এর পর ‘্য’ (য) ফলাযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ থাকলে সে ক্ষেত্রে ‘অ’-এর উচ্চারণ ‘ও’ কারের মতো হয়। যেমন—বন্যা (বোন্না), গণ্য (গোনেনা), কথ্য (কোতথো) ইত্যাদি।
(খ) একাক্ষর শব্দের প্রথম ‘অ’ এবং পরে দন্ত্য ‘ন’ থাকলে ‘ও’ কারের মতো উচ্চারণ হয়। যেমন—মন (মোন্), বন (বোন), জন (জোন্) ইত্যাদি।
(গ) তিন বা তার অধিক বর্ণে গঠিত শব্দের মধ্যে ‘অ’ ও-কাররূপে উচ্চারিত হয়। যেমন—আদর (আদোর্), বেতন (বেতোন্), ওজন (ওজোন্) ইত্যাদি।
(ঘ) ‘ত’ বা ‘ইত’ প্রত্যয়যোগে গঠিত বিশেষণ পদের শেষ ‘অ’ ধ্বনি ‘ও’ ধ্বনিতে পরিবর্তিত হয়। যেমন—উপনীত (উপোনিতো), রক্ষিত (রোকিখতো), নত (নতো) ইত্যাদি।
(ঙ) শব্দান্তে যুক্তবর্ণ থাকলে অন্তিম ‘অ’ ও-কারের মতো উচ্চারিত হয়। যেমন—ভক্ত (ভকেতা), পদ্য (পোদেদা), চিহ্ন (চিনেহা) ইত্যাদি।

৬। প্রশ্ন : উদাহরণসহ ‘ব’ ফলা উচ্চরণের পাঁচটি নিয়ম লেখ।

উত্তর : ‘ব’ ফলা উচ্চারণের পাঁচটি নিয়ম তুলে ধরা হলো :
(ক) আদ্য ব্যঞ্জনবর্ণে ব-ফলা সংযুক্ত হলে সে ব-ফলার কোনো উচ্চারণ হয় না। যেমন—ধ্বনি (ধোনি), স্বাধিকার (শাধিকার্), স্বদেশ (শদেশ্) স্বাগত (শোগতো) ইত্যাদি।
(খ) শব্দের মধ্যে কিংবা শেষে ব-ফলা থাকলে সংযুক্ত বর্ণের উচ্চারণদ্বিত্ব ঘটে থাকে। যেমন—বিশ্ব (বিশেশা), বিদ্বান (বিদ্দান), পক্ক (পকেকা) ইত্যাদি।
(গ) উৎ (উদ্) উপসর্গযোগে গঠিত শব্দের ‘ৎ’ (দ্)-এর সঙ্গে ব-ফলার ‘ব’ বাংলা উচ্চারণে লুপ্ত হয় না। যেমন—উদ্বেগ (উদবেগ), উদ্বোধন (উদবোধোন্), উদ্বাস্তু (উদ্বাস্তু) ইত্যাদি।
(ঘ) বাংলা শব্দে ক থেকে সন্ধির সূত্রে আগত ‘গ’-এর সঙ্গে ‘ব’ ফলা যুক্ত হলে ‘ব’-এর উচ্চারণ অপরিবর্তিত থাকবে। যেমন—দিগ্বিদিক (দিগিবদিক্), দ্বিগ্বলয় (দিগ্বলয়), দিগ্বিজয় (দিগবিজয়্) ইত্যাদি।
(ঙ) ‘ব’ অথবা ‘ম’-এর সঙ্গে ব-ফলা যুক্ত হলে ‘ব’-এর উচ্চারণ অবিকৃত থাকে। যেমন—বাব্বা (বাব্বা), সাব্বাশ (শাব্বাশ্), লম্ব (লমবো) ইত্যাদি।

৭। প্রশ্ন : য-ফলা, র-ফলা, ল-ফলা উচ্চারণের মোট ৫টি নিয়ম লেখো।

উত্তর : য-ফলা, র-ফলা, ল-ফলা উচ্চারণের ৫টি নিয়ম তুলে ধরা হলো :
(ক) আদ্যবর্ণে য-ফলা যুক্ত হলে বর্ণটি অ-কারান্ত বা আ-কারান্ত হলে উচ্চারণ ‘অ্যা’ কারান্ত হয়ে যায়। যেমন—ব্যথা (ব্যাথা), ন্যায় (ন্যায়্) ইত্যাদি।
(খ) পদের মধ্যে কিংবা অন্ত্যে যুক্ত-ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে য-ফলা সংযুক্ত হলে সাধারণত তার কোনো উচ্চারণ হয় না। যেমন—সন্ধ্যা (শোন্ধা), স্বাস্থ্য (শাসথো), কণ্ঠ্য (কনঠো) ইত্যাদি।
(গ) পদের আদ্য ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে র-ফলা সংযুক্ত হলে তার উচ্চারণ ও-কারান্ত হয়ে থাকে। যেমন—প্রকাশ (প্রোকাশ্), গ্রহ (গ্রোহো), ব্রত (ব্রোতো) ইত্যাদি।
(ঘ) র-ফলা যদি পদের মধ্যে কিংবা অন্ত্যে ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে সংযুক্ত হয়, তবে সে বর্ণটির দ্বিত্ব উচ্চারণ হয়ে থাকে। যেমন—রাত্রি (রাতত্রি), ছাত্র (ছাতেত্রা), মাত্র (মাতেত্রা) ইত্যাদি।
(ঙ) ল-ফলা শব্দের মধ্যে বা অন্তে বসলে তার র-ফলার মতো দ্বিত্ব উচ্চারণ হয়। যেমন—অশ্লীল (অসিস্লল), শ্লেষ (স্লেশ), শ্লথ (স্লোথো) ইত্যাদি।

৮। প্রশ্ন : উদাহরণসহ ‘ক্ষ’ ও ‘ঞ্জ’ উচ্চারণের নিয়ম লেখো।

উত্তর : ‘ক্ষ’ ও ‘ঞ্জ’ উচ্চারণের নিয়ম তুলে ধরা হলো :
(ক) শব্দের প্রথমে ‘ক্ষ’ থাকলে তার উচ্চারণ হয় ‘খ’। যেমন—ক্ষমা (খমা), ক্ষণ (খন্) ইত্যাদি।
(খ) শব্দের মাঝে বা শেষে ‘ক্ষ’-এর উচ্চারণ ‘ক্খ’ হয়ে থাকে। যেমন—দক্ষতা (দোকখোতা), পক্ষ (পোকখো)।
(গ) শব্দের মাঝে ‘জ্ঞ’-এর উচ্চারণ গ্যঁ-এর (গ) মতো হয়। যেমন—জ্ঞান (গ্যাঁন্), জ্ঞাপক (গ্যাঁপোক্) ইত্যাদি।
(ঘ) শব্দের আদিতে ‘জ্ঞ’-এর উচ্চারণ গঁ বা গ্যঁ-এর মতো হবে। যেমন—জ্ঞাপন (গ্যাঁপোন্), অজ্ঞান (অগ্গ্যাঁন্), বিজ্ঞপ্তি (বিগগোঁপিত) ইত্যাদি।
(ঙ) শব্দের অন্তে ‘জ্ঞ’ থাকলে উচ্চারণ গঁ, বা গোঁ-এর মতো হবে। যেমন—অবজ্ঞা (অবোগ্গাঁ), অজ্ঞ (অগগোঁ), বিজ্ঞ (বিগেগাঁ) ইত্যাদি।

৯। প্রশ্ন : শব্দের শেষে কোন কোন ক্ষেত্রে ‘অ’-উচ্চারণ লোপ পায় না? উদাহরণসহ ৫টি নিয়ম লেখো।

উত্তর : কথ্য বাংলায় শব্দের শেষের অ ধ্বনি সাধারণত লোপ পায়। তবে এমন কিছু বিশেষ ক্ষেত্র আছে যেখানে অন্ত্য অ-ধ্বনি লোপ পায় না এবং সংবৃত উচ্চারণ হয়। এগুলো হলো :
(ক) শেষ ব্যঞ্জনের অব্যবহিত আগে অনুস্বার বা বিসর্গ থাকলে : ধ্বংস, বংশ, মাংস, দুঃখ ইত্যাদি।
(খ) শব্দটি ত বা ইত প্রত্যায়ান্ত হলে : গত, শত, নন্দিত, লজ্জিত পুলকিত ইত্যাদি।
(গ) শব্দটি তুলনাবাচক তর, তম প্রত্যায়ান্ত হলে : বৃহত্তর, মহত্তর, বৃহত্তম, মহত্তম ইত্যাদি।
(ঘ) ঈয় বা অনয় প্রত্যায়ান্ত শব্দে : পানীয়, নমনীয়, দেশীয় ভারতীয় ইত্যাদি।
(ঙ) শব্দের শেষ ব্যঞ্জনটি হ হলে কলহ, দেহ, দাহ, প্রবাহ, মোহ, স্নেহ, লৌহ ইত্যাদি।

১০। প্রশ্ন : অনুস্বার (ং) বিসর্গ (ঃ) ও চন্দ্রবিন্দু ( ঁ) এর উচ্চারণের নিয়ম উদাহরণসহ লেখো।

উত্তর : অনুস্বার, বিসর্গ ও চন্দ্রবিন্দু নিয়ম উদাহরণসহ আলোচনা করা হলো-
ং (অনুস্ব্বার) : আধুনিক বাংলা ভাষায় উচ্চারণগত দিক থেকে ‘ং’ (অনুস্বার) এবং হসন্তযুক্ত ‘ঙ’ সম্পূর্ণ অভিন্ন। ং-কার উচ্চারণ সর্বত্র ‘অঙ’ হয়। যেমন—অংশ (অংশো), মাংস (মাঙশো), বাংলা (বাঙলা), সংগ্রাম (সঙগ্রাম), সংজ্ঞা (সঙ্গগাঁ) ইত্যাদি।
ঃ (বিগর্স) : সংস্কৃতে বিসর্গের উচ্চারণ ছিল অনেকটা অর্ধ হ-এর মতো। বাংলায় আবেগ শব্দ অর্থাৎ বিস্ময়সূচক অব্যয়ের ক্ষেত্রে বিগর্স ব্যবহৃত হয়। যেমন—উঃ (উহ্), আঃ (আহ্), বাঃ (বাহ্) ইত্যাদি। কিন্তু শব্দের মাঝে বিসর্গ (ঃ) থাকলে ‘অ’-এর উচ্চারণ ‘ও’ এর উচ্চারণ ‘ও’ এর মতো হয়। যেমন—অতঃপর (অতোপপর), নিঃশেষ (নিশশেশ্), দুঃখ, (দুকখো), নিঃসঙ্গ (নিশ্শঙগো) ইত্যাদি।